মোঃ সাবিউদ্দিন: আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহার প্রণয়নে জনগণের মতামত চেয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ। দেশের বিভিন্ন খাত সম্পর্কে ইশতেহারে কী কী বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে এবং আবারও সরকার গঠন করলে আওয়ামী লীগ কী কী নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে- এ বিষয়ে জনমত চেয়ে গণ- বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল দলটি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দেশের প্রতিটি গ্রামে একটি করে পাঠাগার
স্থাপনের প্রতিশ্রুতি প্রদানের আবেদন জানিয়ে মতামত পাঠিয়েছেন শিখরী ফাউন্ডেশনের পরিচালক ও ময়মনসিংহের গ্রাম পাঠাগার জঙ্গলবাড়ী বাতিঘরের সভাপতি মেহেদী কাউসার ফরাজী। উল্লেখ্য, তার প্রতিষ্ঠিত শিখরী ফাউন্ডেশন ২০১৫ সাল থেকে ” একটি গ্রাম, একটি পাঠাগার” প্রকল্পের মাধ্যমে ময়মন- সিংহের প্রত্যন্ত গ্রামসমূহে পাঠাগার স্থাপনের আন্দোলন চালিয়ে আসছে আওয়ামীলীগের নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন উপ-কমিটির কাছে পাঠানো চিঠিতে তরুণ এই সংগঠক লিখেছেন, “পর- াধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে বাঙালির জন্য মুক্ত ও সার্বভৌম ভূখণ্ড বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের বর্তমান সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের মানুষের দিন বদল ঘটেছে ও ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়িত হয়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহারে বাংলাদেশের গ্রামগুলোর সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য “গ্রাম হবে শহর” স্লোগান উল্লেখ করা হয়েছিলো।
সম্প্রতি ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠার যে রূপকল্প ঘোষণা করা হয়েছে, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই বিষয়টিকেই বেশি গুরুত্বারোপ করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছি।”
তিনি লিখেছেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর জীবনের দ্বিতীয় বিপ্লব তথা বাকশাল নিয়ে ভাষণের এক পর্যায়ে শিক্ষিত যুবকদেরকে গ্রামে গিয়ে কাজ করার, দেশের স্বার্থে ফুলপ্যান্টটাকে হাফপ্যান্ট করে কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষের
সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। আমি বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের একজন প্রতিনিধি হিসেবে সেই ভা- ষণটি শুনে উদ্বুদ্ধ হয়ে গ্রামীণ সমাজের অর্থবহ উন্নয়নের স্বার্থে গভীরভাবে চিন্তাভাবনা করে প্রায় এক দশক আগে গ্রামে গ্রামে পাঠাগার নির্মাণের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মকে নৈতিক অবক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষার মাধ্যমে জ্ঞানভিত্তিক সমৃদ্ধ গ্রামীণ সমাজ বিনির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থাকাকালীন ২০১৫ সালের ০৮ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উপলক্ষে স্বপ্রতিষ্ঠিত শিখরী ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও বিভিন্ন পেশাজীবী ও দুই শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের নিয়ে জাতীয় গণগ্রন্থাগার মিলনায়তনে একটি সেমিনার আয়োজন করি।” তিনি উল্লেখ করেন ”
সেই সেমিনারে বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামে একটি করে পাঠাগার স্থাপনের মাধ্যমে বুদ্ধিবৃত্তিক সমাজ বিনির্মাণে ছয়টি দফাসম্বলিত “শিখরী মডেল” ঘোষণা করি, যাতে বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামে একটি করে পাঠাগার স্থাপনের মাধ্যমে সকল শ্রেণীপেশার মানুষের মাঝে পাঠাভ্যাস গড়ে তোলা, অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন মানুষের সহযোগীতায় সকল নিরক্ষর মানুষকে সাক্ষরতার আওতায় নিয়ে আসা, সুস্থ সাংস্কৃতিক বিপ্লবের মাধ্যমে ধর্মান্ধতা ও কুসংস্কার দূরীকরণ, কৃষি ও উৎপাদনশীল খাতে পাঠাগারের জ্ঞানকে কাজে লাগানো, তরুণদেরকে কারিগরি জ্ঞানে সমৃদ্ধ করে ফ্রি-ল্যান্সিং সহ নানামুখী কাজে উদ্বুদ্ধ করে বেকারত্ব দূরীকরণ এবং বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার প্রসারের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে আমূল পরিবর্তন করে জনকল্যাণমুখী করে তোলা প্রভৃতি স্বপ্নের কথা উল্লেখ করি। আওয়ামীলীগের নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন উপ-কমিটির কাছে প্রস্তাবনা পাঠানো সম্পর্কে মেহেদী কাউসার ফরাজী জানান, “দেশের উন্নয়নের জন্য আওয়ামী লীগ কাজ করছে। একই উদ্দেশ্য নিয়ে তরুণ প্রজন্মের একজন প্রতিনিধি হিসেবে প্রতিটি গ্রামে পাঠাগার স্থাপনের জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছি। আমার প্রস্তাবটি তারা পেয়েছেন। বাংলাদেশের কোটি তরুণের স্বপ্ন বাস্তবায়নে আওয়ামী লীগ প্রস্তাবনাটি বিবেচনা করবে বলেই বিশ্বাস করি।